আবারও ভূমিকম্প হয়েছে আফগানিস্তানে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাতে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় ভূকম্পন অনুভূত হয়। এবারের কম্পনটির মাত্রা ছিল পাঁচ দশমিক ছয়। এ নিয়ে ছয় দিনে তৃতীয়বারের মতো ভূমিকম্প হলো আফগানিস্তানে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৫৬ মিনিটে নানগারহার ও কুনার প্রদেশে অনুভূত হয় তৃতীয় ভূমিকম্পটি। আতঙ্কিত হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে লোকজন। এবারের ভূমিকম্পে কেউ নিহত হয়েছে কিনা— তাৎক্ষণিকভাবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, কুনারের একটি হাসপাতাল জানিয়েছে ভূমিকম্পের পর পরই আহত ১৭ জনকে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে গত রোববার প্রথমবারের মতো ভূমিকম্প হয় আফগানিস্তানে। ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দেশটির পূর্বাঞ্চল। লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কমপক্ষে ২৫টি গ্রাম। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের আট কিলোমিটার গভীরে।
সরকার জানিয়েছে, ওই অঞ্চলের দুর্গম ও পাহাড়ি ভৌগোলিক অবস্থার কারণে এখনো উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
রোববারের ভূমিকম্পের মাত্র দুই দিন পর মঙ্গলবার আবারও পাঁচ দশমিক পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পূর্বাঞ্চল। ওই ভূমিকম্পের কারণে, মঙ্গলবার বন্ধ রাখা হয় উদ্ধার তৎপরতা। এরপর গতকাল রাতে আবারও অনুভূত হলো ভূমিকম্প।
বড় বড় ভূমিকম্প ছাড়াও ক্রমাগতই সেখানে আফটার শক অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। এর মধ্যেই চলছে উদ্ধারকাজ। রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় ব্যাহত হচ্ছে তৎপরতা। তবে, হেলিকপ্টারযোগে দুর্গত এলাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে উদ্ধারকর্মী ও ত্রাণকর্মীরা।
তালিবান সরকারের উপ-মুখপাত্র হামদুল্লাহ ফিরাট জানান সামাজিক মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘উদ্ধারকাজ এখনো চলমান। বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। দুর্গত এলাকাগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাবার পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে তালিবান সরকর। আফগানিস্তানের সহযোগিতার জন্য জরুরি তহবিল মুক্ত করেছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া, এক দশমিক তিন মিলিয়ন ডলার সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল হওয়ায় আফগানিস্তান বেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ২০২৩ সালেও ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল আফগানিস্তানে। হেরাত শহরের কাছে ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ছয় দশমিক তিন। ওই ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিল কমপক্ষে এক হাজার চার শ মানুষ। ২০২২ সালেও পাঁচ দশমিক নয় মাত্রার একটি ভূমিকম্পের কমপক্ষে ১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল দেশটিতে।